পরীক্ষার মুখে বাকি বহু পড়ুয়ার রেজিস্ট্রেশন, মামলা করল কলেজ

চলতি শিক্ষাবর্ষে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ বেশ কিছু কলেজে ভর্তি হওয়া পড়ুয়াদের একাংশের এখনও রেজিস্ট্রেশন হয়নি। এ দিকে, প্রথম সিমেস্টারের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে কিছু দিন পরেই। পরিস্থিতি এমন জায়গায় গিয়েছে যে, শেষ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে মামলাও করেছে একটি কলেজ।

চলতি বছরে প্রথম দফায় কলেজগুলিতে ভর্তি নেওয়া হয়েছিল উচ্চ শিক্ষা দফতরের নজরদারিতে কেন্দ্রীয় পোর্টালের মাধ্যমে। এর পরে ক্লাস শুরু হয়। কিন্তু দেখা যায়, বিভিন্ন কলেজে বহু আসন ফাঁকা। এই পরিস্থিতিতে কলেজগুলিকেই আরও পড়ুয়া ভর্তির নির্দেশ দিয়েছিল উচ্চ শিক্ষা দফতর।

কেন্দ্রীয় পোর্টালের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের রেজিস্ট্রেশনের জন্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত সুযোগ দিয়েছিল। কিন্তু মাঝে পুজোর ছুটি পড়ে যায়। এর পরে দেখা যায়, বহু ছাত্রছাত্রী রেজিস্ট্রেশন
করেননি। তখন বিশ্ববিদ্যালয় বলে, শুধুমাত্র কলেজের মাধ্যমে যাঁরা ভর্তি হয়েছেন, সেই পড়ুয়ারা ১১ এবং ১২ ডিসেম্বর রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। ফলে, কেন্দ্রীয় ভাবে ভর্তি হওয়া অনেক ছাত্রছাত্রীরই রেজিস্ট্রেশন হয়নি।

দেখা যায়, এমন কলেজের সংখ্যা ৬০ থেকে ৭০টি। যার মধ্যে রয়েছে আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু কলেজও। সেখানে রেজিস্ট্রেশন না হওয়া পড়ুয়ার সংখ্যা ৩০০-র কাছাকাছি। সংশ্লিষ্ট কলেজগুলির দাবি, তাদের তরফে বার বার বিশ্ববিদ্যালয়কে চিঠি দেওয়া হলেও জবাব আসেনি। এর পরে গত ২১ জানুয়ারি আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু কলেজের অধ্যক্ষ পূর্ণচন্দ্র মাইতি ‘‌ডিমান্ড ফর জাস্টিস’‌ করে বিশ্ববিদ্যালয় এবং উচ্চ শিক্ষা দফতরে চিঠি দেন। দফতর ৩০ জানুয়ারি নির্দেশিকা জারি করে বলে, সকলকে রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ দেওয়া হোক। কিন্তু, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তা মানেনি। এর পরেই আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু কলেজের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে মামলা করা হয়।

এ জে সি বসু কলেজের অধ্যক্ষ তথা নিখিল বঙ্গ অধ্যক্ষ কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক পূর্ণচন্দ্র মাইতি বলেন, ‘‘আমার কলেজে এখনও প্রায় ৩০০ ছাত্রছাত্রীর রেজিস্ট্রেশন হয়নি। ২০ ফেব্রুয়ারি প্রথম সিমেস্টারের পরীক্ষা শুরু। দেখা যাচ্ছে, রেজিস্ট্রেশন না হওয়ায় অনেকে কলেজেও আসছে না।’’ তিনি জানান, এই অবস্থায় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়কে অনুরোধ করেছিলেন। উচ্চ শিক্ষা দফতর থেকেও বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু কোনও ফল হয়নি।

বিষয়টি নিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য শান্তা দত্ত দে বলেন, ‘‘চার বার রেজিস্ট্রেশন করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। আর কত বার দেওয়া হবে? মামলা হয়েছে। বিচারপতি যা বলবেন, তা-ই শিরোধার্য।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back To Top