মিনি ডার্বিতে মহমেডানকে হারিয়ে মুখরক্ষা ইস্ট বেঙ্গলের

অম্বরীশ চট্টোপাধ্যায়, কলকাতা: লিগ টেবিলে তলানিতে দুই দল। সুপার সিক্সে পৌঁছনোর কোনও সম্ভাবনা নেই। তবু স্রেফ জার্সির টানে যুবভারতীতে হাজির কয়েক হাজার সমর্থক। সম্মানের লড়াইয়ে মহমেডান স্পোর্টিংকে ৩-১ গোলে হারাল ইস্ট বেঙ্গল। মিনি ডার্বি জিতলেও মন ভরাতে ব্যর্থ দিয়ামানতাকোসরা। ২০ ম্যাচে ২১ পয়েন্ট নিয়ে একাদশতম স্থানেই রইল লাল-হলুদ ব্রিগেড। অন্যদিকে, টানা চার ম্যাচে হার মহমেডানের। ১১ পয়েন্ট নিয়ে লাস্ট বয় রেড রোডের পাশের ক্লাব।
মহমেডানের ৪-৩-৩ ফর্মেশনের পাল্টা ৪-৪-২ ছকে দল সাজিয়েছিলেন অস্কার ব্রুজোঁ। জোড়া বিদেশি দিয়ামানতাকোস ও মেসি বৌলিকে দিয়ে শুরুতে চাপ বাড়াতে চেয়েছিলেন তিনি। অন্তত দু’টি ক্ষেত্রে সুবিধাজনক জায়গায় বল পেয়েও ব্যর্থ গ্রিসের স্ট্রাইকার দিয়ামানতাকোস। ম্যাচের পর এক প্রবীণ সমর্থকের আক্ষেপ— হ্যালির ধূমকেতু আর দিমির গোল দেখতে পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার! যাইহোক, ২৭ মিনিটে কাঙ্ক্ষিত লিড পায় ইস্ট বেঙ্গল। তবে এই গোলের ক্ষেত্রে দায় এড়াতে পারবেন না মহমেডান গোলরক্ষক পদম ছেত্রী। বিষ্ণুর পাস ধরে গতি বাড়িয়ে প্রতিপক্ষ বক্সে প্রবেশ করেন মহেশ। প্রথম পোস্ট অহেতুক খালি রাখলেন পদম। সেটা দেখেই জোরালো শটে জাল কাঁপান মহেশ (১-০)। এর চার মিনিট পরেই গোল শোধের সুযোগ হারালেন মহমেডানের বিদেশি মার্ক আন্দ্রে। 
বিরতির পর দুই দলেই একাধিক পরিবর্তন হয়। মার্ক আন্দ্রের জায়গায় রবি হাঁসদাকে মাঠে নামান মহমেডান কোচ মেহরাজ। অন্যদিকে, নন্দের পরিবর্তে আসেন ক্রেসপো। আসলে নন্দ এখন লাল-হলুদের নিরানন্দ। মাঠে নেমে নিজের দ্বিতীয় টাচেই লক্ষ্যভেদে সফল স্প্যানিশ মিডিও। এক্ষেত্রেও বড় ভুল মহমেডান ডিফেন্ডার আর গোলকিপারের। ৬৭ মিনিটে পদম ও মাফেলার ভুলে বল ছিনিয়ে নেন ক্যামেরুনের মেসি। তাঁর বাড়ানো পাস ছোট্ট লবে জালে পাঠান ক্রেসপো (২-০)। পদম, মাফেলার মতো নিম্নমানের ফুটবলারদের টাকা দিয়ে রিক্রুট করেন কারা, জবাবদিহি চাওয়া উচিত। তবে ইস্ট বেঙ্গলের স্বস্তি বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। সন্তোষ ট্রফি জয়ী দলের নায়ক রবি হাঁসদা বেশ নড়াচড়া করলেন। তাঁর বাঁ পায়ের থ্রু পাস ধরে ব্যবধান কমান ফ্রাঙ্কা (২-১)। নাটক তখনও বাকি। ৭৫ মিনিটে মশাল বাহিনীর নিশ্চিত পতন রুখলেন আনোয়ার। অ্যালেক্সিসের শট গিলের হাতে লেগে এসেছিল রবির পায়ে। তাঁর লব ক্রসপিসে বাধা পায়। এরপর ফিরতি বলে রেমসাঙ্গার বাইসাইকেল কিক গোললাইন সেভ করেন আনোয়ার। মিস দেখে মাথায় হাত মেহরাজের। চাপা টেনশন গ্যালারিতে। কাঁপতে থাকা ব্রুজোঁর দলে শেষপর্যন্ত ফুরফুরে মেজাজ আনলেন ডেভিড।  ম্যাচের ৮৭ মিনিটে বাঁ দিকে বল ধরে বক্সে লম্বা সেন্টার রেখেছিলেন দিয়ামানতাকোস। সেই বল লাকরা নামিয়ে দেওয়ার পর হাফটার্ন করে দুরন্ত ভলিতে জাল কাঁপান মিজো ফুটবলার (৩-১)। কপিবুক গোল দেখে মুগ্ধ প্রাক্তনরা বলছেন, এরপরেও ডেভিডকে বসিয়ে রাখলে ঘোর অবিচার হবে।
মহমেডান: পদম, জুডিকা, ফ্লোরেন্ট, গৌরব, জোহেরলিয়ানা, মাফেলা, অ্যালেক্সিস, ফ্রাঙ্কা, রেমসাঙ্গা (বিকাশ), মার্ক আন্দ্রে (রবি), মনবীর (মাকেন)।
ইস্ট বেঙ্গল: গিল (দেবজিৎ), নিশু, অনোয়ার, হেক্টর, রাকিপ, নন্দকুমার, শৌভিক, নাওরেম (লাকরা), বিষ্ণু, মেসি বাওলি (ডেভিড), দিয়ামানতাকোস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back To Top