ভোট প্রচারে ‘রেউড়ি সংস্কৃতি’ নিয়ে একসময় বিরোধীদের কটাক্ষ করতেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। যদিও দান-খয়রাতির সেই রাজনীতিতে বিজেপিও পিছিয়ে নেই। তারই মধ্যে ভোটের সময় হিসেব বহির্ভূত নগদ, মদ, সোনা-রুপো, মাদকের আনাগোনা প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে। যা সাধারণত ভোটারদের মন জয়ের জন্য বিলি করা হয়। কোন দল মজুত করেছে, তার নির্দিষ্ট তথ্য না মিললেও এমন সামগ্রীর তালিকায় শীর্ষ উঠে এসেছে মোদি রাজ্য গুজরাত। পিছিয়ে নেই ডাবল ইঞ্জিনের রাজ্য মহারাষ্ট্রও। বলছে খোদ নির্বাচন কমিশনের তথ্য।
আবার কম খরচ করেও যে ভোটে জেতা যায়, দেখিয়ে দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। দলীয় সাহায্যের বাইরে এক একজন প্রার্থী লোকসভা ভোটে ৯৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ করতে পারেন। আর এই হিসেবের খাতায় নির্বাচন কমিশনে জমা পড়া তথ্য বলছে, প্রার্থী হিসেবে সবচেয়ে বেশি খরচ করেছেন কংগ্রেসের সাংসদ শশী থারুর। ৯৪ লক্ষ ৮৯ হাজার ৮৪৬ টাকা। আর সবচেয়ে কম খরচ করেছেন তৃণমূলের প্রতিমা মণ্ডল। মাত্র ১২ হাজার ৫০০ টাকা। চমকপ্রদ হলেও নির্বাচন কমিশন প্রকাশিত ‘অ্যাটলাস-২০২৪’ রিপোর্টে তেমনই উল্লেখ করা হয়েছে।
তথ্য বলছে, ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে ১০ হাজার ১০৬ কোটি ২০ লক্ষ টাকা মূল্যের হিসেব বহির্ভূত সামগ্রী ধরা পড়েছে। যেটি এখনও পর্যন্ত সর্বাধিক। এর মধ্যে শুধুমাত্র নগদই ১ হাজার ৬৬ কোটি ৫৯ লক্ষ টাকা। হিসেব বহির্ভূত সোনাদানা ১ হাজার ৪৮৬ কোটি ৩৪ লক্ষ টাকার। সবচেয়ে বেশি হিসেব বহির্ভূত সামগ্রী বাজেয়াপ্ত হয়েছে গুজরাত থেকে। যা টাকার অঙ্কে ১ হাজার ৪৬৪ কোটি ৩০ লক্ষ। কমিশনের রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, লোকসভা ভোটে গুজরাত থেকে ১ হাজার ১৮৭ কোটি ৮৬ লক্ষ টাকা মূল্যের মাদক বাজেয়াপ্ত হয়েছে। যা দেশের মধ্যে সর্বাধিক। সবচেয়ে বেশি হিসেব বহির্ভূত নগদ বাজেয়াপ্ত হয়েছে ডাবল ইঞ্জিন রাজ্য মহারাষ্ট্রে। ১৩৬ কোটি ৪১ লক্ষ টাকা।
অন্যদিকে, ভোটে প্রার্থীদের খরচের ক্ষেত্রে গোটা দেশে সবচেয়ে বেশি এবং সবচেয়ে কমের যে ৩০ জনের হিসেব কমিশন দিয়েছে, তা উল্লেখযোগ্য। গোটা দেশে প্রার্থীরা মোট খরচ করেছেন ৮৬২ কোটি ৬৮ লক্ষ ৮০ হাজার ২৭৩ টাকা। প্রার্থী হিসেবে সর্বাধিক খরচের তালিকায় শশী থারুর নাম্বার ওয়ান। চতুর্থ স্থানে বিজেপির কঙ্গনা রানাওয়াত। ব্যক্তিগতভাবে খরচ করেছেন ৯৪ লক্ষ ২৯ হাজার ৮৮৫ টাকা। ষষ্ঠ স্থানে তৃণমূলের দীপক অধিকারী (দেব)। খরচ করেছেন ৯৩ লক্ষ ৬২ হাজার ৬৯৮ টাকা। খরচের হিসেবে রাহুল গান্ধী দশম স্থানে। খরচ দেখিয়েছেন ৯২ লক্ষ ৮২ হাজার ৯৪৯ টাকার। আর সবচেয়ে কমের শীর্ষে যেমন রয়েছেন প্রতিমা মণ্ডল, একই তালিকায় দশম স্থানে সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু। অরুণাচলের এই সাংসদ ২০ লক্ষ ৬৭ হাজার ৯৬০ টাকা খরচ করে জিতেছেন।
